কে কী বলল তা শুনে মুখ লুকাবে না
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেছেন, নিজেদের বিশ্বাস থেকে চলতে শিখতে হবে। কে কী বলেছে শুনে চোখের জল ফেলবেন না বা মুখ লুকাবেন না। নিজের বিশ্বাসকে মেনে চললেই দেশ এগিয়ে যেতে পারে। মানুষের সেবা করা, তাদের পাশে দাঁড়ানো- এটাই হবে মানুষের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব।
সোমবার মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে স্নাতক (পাস) ও সমমানের দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বিতরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের (পিএমইএটি) অধীনে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তিনি। খবর বাস।
এ কর্মসূচির মাধ্যমে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও সমমানের ৬৪ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ২ হাজার ২০৮ কোটি টাকা বিতরণ করা হবে। একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ‘বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা-২০২৪’-এর ১৫ জন শিক্ষার্থী এবং ২১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২০২৩ সালের ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলার অ্যাওয়ার্ড’ বিতরণ করেন। বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল প্রতিভা অন্বেষণ প্রতিযোগিতায় পুরষ্কারপ্রাপ্ত ১৫ জনের প্রত্যেকেই ২ লাখ টাকা ও সনদপত্র পান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলার অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত ২১ জনের প্রত্যেকেই পেয়েছেন সনদপত্র ও ৩ লাখ টাকা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উপবৃত্তি ও টিউশন ফি’র টাকা ডিজিটাল মাধ্যমে সরাসরি সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছে যাবে। এভাবে টাকা বিতরণ করতে পেরে তিনি খুব খুশি হন। তরুণ সমাজ সকল বাধা অতিক্রম করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'আমি নিজে শিক্ষিত হব, নিজে ভালো থাকব, দেশকে কিছু দেব না, আমার চারপাশের মানুষ গরিব থাকবে- এমনটা হয় না। সবাইকে একসাথে এগিয়ে যেতে হবে।
পরিবর্তিত বিশ্বে এর মান বজায় রাখতে সরকার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বহুমাত্রিক ও সৃজনশীল করতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বৈশ্বিক চাহিদা অনুধাবন করে তার সরকার কৃষি, ভেটেরিনারি মেডিসিন, প্রাণিবিদ্যা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চালু করেছে। , ঔষধ, বিমান চালনা, স্থান এবং ফ্যাশন এবং প্রযুক্তি। অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রতিষ্ঠিত বহুমাত্রিক বিশ্ববিদ্যালয়। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট (পিএমইএটি) গঠন করা হয়েছে সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের তাদের প্রতিভা বিকাশে সহায়তা করার জন্য তাদের মেধাকে দেশ ও মানবতার স্বার্থে কাজে লাগানোর জন্য।
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আরও বলেন, 'এখন যদি কেউ সারাক্ষণ বলে- পড়, পড়, পড়; বল তোমার কি পছন্দ? আমি এটা মোটেও পছন্দ করি না। যাও নাকি পড়ার ইচ্ছা আছে, তাও হারিয়ে গেছে। সে জন্য শিক্ষাব্যবস্থা এমনভাবে করতে হবে যাতে শিশুরা আগ্রহ নিয়ে পড়বে। পড়ুন, পড়ুন বা মারবেন না। আমরা সেই ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই। আমি জানি, পরিবর্তন এলে অনেকেই নানা কথা বলে। তা ছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যা মনে আসে সমালোচনা করে খুশি। আমরা বাঙ্গালীরা গসিপ খুব পছন্দ করি। গপ্পো ছাড়া কোনো জমায়েত হয় না। তিনি যা মনে করেন তাই লেখেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আপনার নিজের উপর আস্থা থাকতে হবে। নিজের উপর আস্থা রাখুন। কেউ আপনার একটু সমালোচনা করলে ভয় পাওয়ার দরকার নেই। আত্মসম্মান, আত্মবিশ্বাস মানুষকে শক্তি দেয়। এটা চোখের জল ফেলার মতো নয়। আর মুখ লুকিয়ে কে বলেছে নিজের বিশ্বাসে চলতে শিখতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার, শিক্ষা সচিব সোলেমান খান প্রমুখ বক্তব্য দেন। হাজারীবাগ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী নুসরাত জাহান মালিহা; দিনাজপুরের আমেনা-বাকী রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্রী আতিফা রহমান; খুলনার সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল কলেজের পিনাকমুগ্ধা দাস বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল প্রতিভা অন্বেষণ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী জেরিন তাসনিম রাইসা ও আল ফয়সাল বিন কাসেম কানন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলারস অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
What's Your Reaction?