'জল্লাদ' শাহজাহানকে নিজ গ্রামে দাফন সম্পন্ন করা হয়
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামিসহ ২৬ জনের ফাঁসির আসামি 'জল্লাদ' শাহজাহান ভূঁইয়ার জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
মঙ্গলবার তার নিজ গ্রাম নরসিংদীর পলাশের সাধুর বাজার ফুটবল খেলার মাঠে জানাজা শেষে ইছাখালী গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে সোমবার ভোর সাড়ে ৫টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ফাঁসির আসামি শাহজাহানের বোন ফিরোজা জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের তৎপরতার কারণে গতকাল লাশ আনা সম্ভব হয়নি। আজ ময়নাতদন্ত শেষে আড়াইটার দিকে লাশ বাড়িতে নিয়ে আসি।
নিহতের স্বজনরা জানান, জল্লাদ শাহজাহান সাভারের হেমায়েতপুরে ভাড়া বাসায় থাকতেন। সেখানে সোমবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে তার বুকে ব্যথা শুরু হয়। পরে বাড়ির মালিক তাকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
উল্লেখ্য, আলোচিত ‘জল্লাদ’ শাহজাহান ৩১ বছর ৬ মাস ২ দিন সাজা ভোগ করার পর গত বছরের ১৮ জুন সকাল ১১টা ৪৭ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান।
জল্লাদ শাহজাহানের পুরো নাম শাহজাহান ভূঁইয়া। সে নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ইছাখালী গ্রামের মৃত হাছেন আলীর ছেলে। 74 বছর বয়সী শাহজাহান কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর এক তরুণীকে বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের কয়েক মাস পরই তাদের বিচ্ছেদ ঘটে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের রেকর্ড অনুযায়ী, শাহজাহান ভূঁইয়া দুটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। একটি ডাকাতি করার সময় হত্যা মামলা এবং আরেকটি অস্ত্র আইনে মামলা। এ দুটি মামলায় ১৯৯১ সালের ১৭ মে থেকে কারাগারে ছিলেন শাহজাহান। দুটি মামলায় তাকে 42 বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মৃত্যুদন্ড এবং অন্যান্য কারণে তার সাজা কমিয়ে ৩২ বছর করা হয়। সেই সাজা শেষে গত বছরের ১৮ জুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান শাহজাহান। শাহজাহান তার 42 বছরের সাজার প্রতিটি ফাঁসির জন্য দুই মাসের কারাদণ্ড পেয়েছিলেন।
কারাবিধি অনুযায়ী আচরণ ও অন্যান্য কারণে শাহজাহান মোট ১০ বছর ৫ মাসের ছাড় পেয়েছেন। তিনি 31 বছর 6 মাস 2 দিন দায়িত্ব পালন করেন। হাতে কোনো টাকা না থাকায় শাহজাহানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়, জেল কর্তৃপক্ষ তা মিটিয়ে দিয়েছে।
কারাগারের নথি অনুযায়ী, শাহজাহান 2001 থেকে মুক্তি পর্যন্ত 26 জনকে ফাঁসি দিয়েছিলেন। যার মধ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ছয় আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া চারজন যুদ্ধাপরাধী, দুই জেএমবি সদস্যসহ ১৪টি বিতর্কিত মামলা রয়েছে।
What's Your Reaction?