নবম শ্রেণী থেকে আবার বিভাগ বাতিলের পরিকল্পনা

Jan 4, 2025 - 10:46
 0  0
নবম শ্রেণী থেকে আবার বিভাগ বাতিলের পরিকল্পনা

নবম শ্রেণি থেকে আবারও বিভাগ বিলুপ্ত করার পরিকল্পনা করছে শিক্ষা দফতর। পরিকল্পনা অনুযায়ী নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু বিষয় বাধ্যতামূলক করা হবে এবং অনেক বিষয় খোলা রাখা হবে। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সংখ্যক বিষয় বেছে নিতে পারবে।

আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এমনটা হলে এ বছরের মতো বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের মতো আলাদা কোনো বিভাগ থাকবে না। একজন শিক্ষার্থী তার কর্মজীবনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, বাধ্যতামূলক বিষয়ের বাইরে পদার্থবিদ্যা, রসায়নের পাশাপাশি অর্থনীতি বা অন্যান্য বিষয় অধ্যয়ন করতে পারেন।

নতুন কারিকুলামের আলোকে গত বছর নবম শ্রেণি থেকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ বাদ দেওয়া হয়। তবে এই প্রক্রিয়ায় বিষয় নির্বাচনের কোনো স্বাধীনতা ছিল না। সমস্ত ছাত্রদের 10টি সাধারণ বিষয় অধ্যয়ন করতে হয়েছিল। পরিকল্পনা ছিল দশম শ্রেণি পর্যন্ত সবাইকে একই বিষয় পড়ানো এবং তারপর একাদশ শ্রেণিতে ভাগ করে দেওয়া। এক্ষেত্রে উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিষয় থাকবে। তবে কেউ যদি মনে করেন যে তিনি অন্য বিষয়েও আগ্রহী, তাহলে তাকে এ ধরনের বিষয়ে পড়ার সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছিল। অবশ্য এর পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা হয়েছে।

রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর বাদ পড়েছে নতুন পাঠ্যক্রম। পুরনো শিক্ষাক্রমের আলোকে গত বুধবার থেকে শুরু হওয়া নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে নবম শ্রেণিতে আবারও বিভাগ চালু করা হয়েছে। এতে একজন শিক্ষার্থী পুরোনো পদ্ধতির মতো বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পড়াশুনা করবে, যেখানে বাধ্যতামূলক বিষয়ের পাশাপাশি তিনটি বিভাগ ভিত্তিক নির্বাচনী বিষয় নেবে। এছাড়া ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে আরেকটি বিষয় নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে জানা গেছে, এ বছর থেকে ভিন্ন পদ্ধতিতে নবম শ্রেণি থেকে শ্রেণি বিভাজন বাতিলের পরিকল্পনা করেছিল শিক্ষা বিভাগ। কিন্তু প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির অভাবে এ বছর তা বাস্তবায়ন হয়নি। এখন আগামী বছর থেকে তা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

এ পরিকল্পনার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বুধবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেন, কিছু বিষয় বাধ্যতামূলক রেখে বিজ্ঞান, মানবিক বা বাণিজ্য শাখা বলা হয় এমন অনেক বিষয় বাতিল করা যেতে পারে। এগুলো বিলুপ্ত করে সব বিষয় (শাখা বা বিভাগের বিষয়) ঐচ্ছিক করা যেতে পারে। যাতে শিক্ষার্থীরা ইচ্ছা করলে বিজ্ঞানের পাশাপাশি মানবিক বিষয়ও নিতে পারে। এইভাবে, সেই ছাত্র ভবিষ্যতে যে কোনও কিছু হতে পারে। এবার সেটা করা গেল না। কারণ, এতগুলো বিষয় ঐচ্ছিক করলে স্কুলের সময়সূচি ও শ্রেণিকক্ষে সমস্যা হবে। তবে ভবিষ্যতে তা সম্ভব।

এনসিটিবির একাধিক কর্মকর্তাও এই পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। একজন আধিকারিক জানিয়েছেন যে এখানে মোট 10টি বিষয়ে পড়াশোনা করা হবে। এর মধ্যে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) এবং ধর্মের মতো পাঁচ থেকে ছয়টি বিষয় বাধ্যতামূলক করা হবে, বাকিগুলো খোলা রাখা হবে। শিক্ষার্থীরা অবশিষ্ট বিষয় থেকে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক বিষয় নির্বাচন করবে।

এনসিটিবির আরেক কর্মকর্তা বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে বর্তমানে একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা থাকলেও অনেক বিকল্প রয়েছে। যেকোনো শিক্ষার্থী ইচ্ছা করলে বিজ্ঞানের সব বিষয় নিতে পারে অথবা কিছু বিজ্ঞান বিষয় এবং কিছু মানবিক বা ব্যবসায় শিক্ষার বিষয় বেছে নিতে পারে। বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা থাকলে শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে পড়াশোনা করতে পারবে। ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষায় এমন ব্যবস্থা আছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, স্থগিত পাঠ্যক্রমের নবম শ্রেণিতে বিভাগটি সরিয়ে ফেলা হলেও সবার জন্য ১০টি বিষয় বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কোনো স্বাধীনতা ছিল না।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow